ভূমিকা :- উনবিংশ শতকের প্রথমার্ধে পাশ্চাত্য শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রভাবে বাংলার সমাজ ও ধর্ম সংস্কার আন্দোলনের সূচনা হয় | রামমোহন রায় ও পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ছিলেন এই সংস্কার আন্দোলনের পথিকৃৎ | তাদের পরিচালিত সংস্কার আন্দোলনের যুক্তিবাদী ও মানবতা বাদী চেতনার প্রতিফলন পড়েছি | প্রচলিত সামাজিক কুসংস্কার ও গোঁড়ামি অপসারণ করে তারা সমাজ জীবনকে কলুষমুক্ত করতে চেয়ে ছিলেন | সামাজিক _ সংস্কারের ক্ষেত্রে প্রধান দিকটি ছিল নারী জাতির কল্যাণ সাধন |
বিদ্যাসাগরের অবদান :- উনবিংশ শতকের অন্য এক বিরাট পন্ডিত ও সংস্কার ছিলেন ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর । সারা জীবন ধরে তিনি সামাজিক সংস্কারে ব্রতী থাকেন । বিদ্যাসাগর নারী মুক্তি আন্দোলন (1820-91 খ্রি:) প্রবল সার্থক ছিলেন । হিন্দু বিধবাদের অসহনীয় দুঃখ-কষ্ট ও তাদের ওপর পরিবার ও সমাজের অহেতুক নির্যাতন - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে গভীরভাবে ব্যতীত করেছিলেন । বিধবাদের মুক্তির জন্য তিনি আমরণ সংগ্রাম চালিয়ে যান । তিনি হিন্দুশাস্ত্র উদ্ধৃত করে বিধবা - বিবাহের জোর বক্তব্য রাখেন । তিনি বহু বিবাহ , বাল্যবিবাহ প্রভৃতি কুসংস্কারের বিরুদ্ধে প্রবল জনমত গড়ে তোলেন । শেষ পর্যন্ত তার আন্দোলন সফল হয় এবং 1856 খ্রিস্টাব্দে বিধবা - বিবাহ আইন সিদ্ধ হয় ।1856 খ্রিস্টাব্দের 7ই ডিসেম্বরের কলকাতায় উঁচু বর্ণের এক পরিবারের বিদ্যাসাগরের তত্ত্বাবধানে প্রথম বিধবা - বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়
1850 খ্রিস্টাব্দে বিদ্যাসাগরের বাল্য - বিবাহের বিরুদ্ধে জোর প্রচার শুরু করেন এবং 1856 খ্রিস্টাব্দে প্রায় 50 হাজার মানুষের স্বাক্ষর সম্মিলিত এক আবেদন - পত্র সরকারের কাছে পেশ করেন ।
নারী শিক্ষা বিস্তারের ব্যাপারেও তার চেষ্টার ত্রুটি ছিল না । বিদ্যাসাগর বুঝেছিলেন , নারী জাতি অনগ্রসর ও কুসংস্কারচ্ছন্ন হয়ে থাকলে সমাজ পিছিয়ে থাকবে । স্ত্রী - শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে বিদ্যাসাগর , রামগোপাল ঘোষ , রাধাকান্ত দেব প্রমুখ ব্যক্তিদের সাহায্য ও সহযোগিতা পান । বিদ্যালয় পরিদর্শকের সহকারী পদে থাকার ' সুযোগ তিনি 35 টি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেন । এক্ষেত্রে তার উল্লেখযোগ্য ।