Translate

ভারতীয় নারীদের কল্যাণের জন্য রামমোহন এর অবদান


 ভূমিকা :- উনবিংশ শতকের প্রথমার্ধে পাশ্চাত্য শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রভাবে বাংলার সমাজ ও ধর্ম সংস্কার  আন্দোলনের সূচনা হয় | রামমোহন রায় ও পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ছিলেন এই সংস্কার আন্দোলনের  পথিকৃৎ | তাদের পরিচালিত সংস্কার আন্দোলনের যুক্তিবাদী ও মানবতা বাদী চেতনার প্রতিফলন পড়েছি | প্রচলিত সামাজিক কুসংস্কার ও   গোঁড়ামি অপসারণ  করে তারা সমাজ জীবনকে কলুষমুক্ত  করতে চেয়ে ছিলেন | সামাজিক -সংস্কারের ক্ষেত্রে প্রধান দিকটি   ছিল  নারী জাতির কল্যাণ সাধন |

 রামমোহন রায়ের অবদান :-  রাজা রামমোহন রায়ের  চিরস্মরণীয় পদক্ষেপ হলো সতীদাহ  প্রথার অবসান | প্রাচীনকাল থেকেই প্রথার চলছিল | মৃত স্বামীর জ্বলন্ত চিতার   বিধবার সহমরণকে ' সতীদাহ  প্রথা ' বলা হত ।   1818  খ্রিস্টাব্দ থেকেই রামমোহন  এই প্রথার বিরুদ্ধে প্রবল জনমত গড়ে  তুলতে   প্রয়াসী হন । তিনি বিভিন্ন হিন্দু শাস্ত্র  উদ্ধৃত করে - এই মত প্রচার করেন যে , সতীদাহ প্রথা ধর্মবিরুদ্ধ ; সেই সঙ্গে তিনি জনমত গড়ে তোলেন । শেষ পর্যন্ত বেন্টিঙ্ক  1829 খ্রিস্টাব্দে ' সপ্তদশ - বিধি ' নামে আইন পাস করে এই নিষ্ঠুর প্রথা নিষিদ্ধ করেন । অধ্যাপক ডেভিড  কক্, দিলীপ বিশ্বাস প্রমুখ ব্যক্তি সতীদাহ উচ্ছেদে   রামমোহনের  সক্রিয় ভূমিকার প্রশংসা করেছেন । অধ্যাপক বিশ্বস্ততার 'রামমোহন  সমীক্ষা ' শীর্ষক গ্রামে  যথার্থই  বলেছেন  যে , সতীদাহ প্রথার বিরুদ্ধে হিন্দুসমাজের মনে আন্দোলনর মাধ্যমে চেতনা  সঞ্চার  করাটাই এক্ষেত্রে রামমোহনের প্রধান ও মহৎ কীর্তি '।

‌                                                                   এছাড়া  বহু - বিবাহ  ও  বর্ণভেদ  প্রথার বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন চালিয়ে যান । নারী - পুরুষের    সমানাধিকার, সর্বোপরি  নারীরা যাতে অধীন ভাবে বাঁচতে পারে তার জন্য বিষয় - সম্পত্তিতে নারীদের উত্তরাধিকারীদের  দাবি প্রতিষ্ঠা করার ব্যাপারেও  রামমোহনের চেষ্টার ত্রুটি ছিল না ।  যদিও নারী শিক্ষা বিস্তারে  তার আগ্রহের  অভাব আমাদের কিছুটা অবাক করে ।