উঃ- ছাত্রদল সম্পর্কে পরিবেশ সচেতন কবি নজরুলের অভিমত এমনই। ছাত্রদলই পারে একটি দেশকে নেতৃত্ব দিতে সমাজকে গঠন করতে। তারাই আবার পারে পরিবেশের বিবিধ উপাদানগুলির ভারসাম্য রক্ষা করতে।
পৃথিবীতে সমস্ত উপাদানই প্রায় যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে। অর্থাৎ, কোনো একটি উপাদানের বৃহৎ অংশ হ্রাসপ্রাপ্ত হলে বা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হলে, পরিবেশ তার স্বাভাবিক অবস্থায় থাকতে পারে না। একেই পরিবেশের ভারসাম্য বলে। সুতরাং, পরিবেশের স্বাভাবিক থাকার আর-এক নাম পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষিত হওয়া।
যত্রতত্র বৃক্ষচ্ছেদন পরিবেশের ভারসাম্যকে দারুণভাবে বিঘ্নিত করে। ছাত্রসমাজ-এর প্রতিবাদস্বরূপ প্রতিরোধ, মিছিল, মিটিং, স্মারকলিপি প্রদান অথবা চিপকো আন্দোলনের মতো গাছকে জড়িয়ে রেখে বনজ পরিবেশকে রক্ষা করতে পারে। এ ছাড়া প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক বৃক্ষরোপণের কর্মসূচি গ্রহণ করা যেতে পারে।পরিবেশের অবাঞ্ছিত অপরিশোধিত পদার্থ বা উচ্ছিষ্ট অংশ জলাশয়ে মিশে জলের ভারসাম্য বিঘ্নিত করে। ছাত্রসমাজ এর মারাত্মক অপকারিতা সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট জনসাধারণকে সচেতন করতে পারে। আবার নির্বিচারে জলাশয় বুজিয়ে আবাস নির্মাণের জোরালো প্রতিবাদে শামিল হতে পারে।
কৃষিই আমাদের বর্তমান আর ভবিষ্যৎ। ভারতের অর্থনীতির প্রধান ভরসাও হল কৃষি। সুতরাং, ছাত্রসমাজ কৃষিজ পরিবেশকে বাঁচাতে বদ্ধপরিকর। শিক্ষার্থীরা অতি উচ্চফলনশীল বীজ ব্যবহার করার জন্য যেমন প্রচার চালাতে পারে, তেমনই অতি প্রয়োজনীয় কৃষিজমি রক্ষা করার জন্যও প্রচার চালাতে পারে। আবার কৃষিজমি সংস্কারেও ছাত্ররা নিজেদের যুক্ত করতে পারে।
পরিভূত অক্সিজেন যেমন জীবনধারণের জন্য অত্যাবশ্যকীয় উপাদান, তেমনই আবার কার্বন ডাইঅক্সাইডের। মতো দ্রুত বৃদ্ধি আমাদের জীবনধারণে সংকট সৃষ্টি করে। ছাত্রসমাজ অক্সিজেনের বৃদ্ধি ও কার্বন ডাইঅক্সাইডের মতো গ্যাসগুলির হ্রাসের বৈজ্ঞানিক উপায়সমূহ জনসমক্ষে প্রচার ও প্রসারের ভার নিতে পারে।
এ ছাড়া গৃহ-পরিবেশ, বিদ্যালয় পরিবেশ, সাংস্কৃতিক পরিবেশ, গ্রাম্য পরিবেশ ইত্যাদি পরিবেশের সুস্থতা, গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা নিজেরা উপলব্ধি করে ছাত্রসমাজ সমাজের প্রত্যেকটি মানুষকে সচেতন করে তুলতে পারে।
সবশেষে বলা যায়, এই পৃথিবী সবার। তাই একে রক্ষা করার দায়িত্ব সকলের। ছাত্রসমাজের সঙ্গে সাধারণ মানুষকেও তাই এগিয়ে আসতে হবে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য।