সত্যজিৎ রায় এর জীবনী
সত্যজিৎ রায় শুধুমাত্র একজন ভারতীয় আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন চলচ্চিত্র পরিচালক ছিলেন না, তিনি ছিলেন বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক। তিনি শুধু দেশের নয়, বহু আন্তর্জাতিক শ্রেষ্ঠ পুরস্কারগুলো অর্জন করেন একাধিকবার। এক হিসাবে জানা যায়, ১৯৮৪ সন পর্যন্ত তিনি মোট ২৮টি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন, যা বিশ্বের চলচ্চিত্র ইতিহাসে আর কারো পক্ষে অর্জন করা সম্ভব হয়নি।
১৯২১ খ্রি: ২রা মে ময়মনসিংহের মসুয়ার জমিদার বংশে সাহিত্যিক, চিত্রশিল্পী ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের জন্ম। তাঁর পিতা বাংলা শিশু সাহিত্যে খেয়ালরসের স্রষ্টা সুকুমার রায়, মাতা সুপ্রভাদেবী।
এই বংশেরই উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ছিলেন শিশু সাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ, চিত্রশিল্পী ও যন্ত্রকুশলী। সত্যজিৎ ছিলেন তাঁরই পৌত্র। কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারের মতই মসুয়ার রায়চৌধুরী পরিবারও বাংলার সাহিত্য ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে তাদের বিশেষ অবদানের জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে আছে।
তার যখন আড়াই বছর বয়স তখন তিনি পিতৃহারা হন, মাতা সুপ্রভাদেবীর সঙ্গে সত্যজিৎ ছয় বছর বয়স থেকে মামার বাড়িতে থাকেন। মায়ের কাছেই প্রাথমিক পড়াশুনা আরম্ভ। সংসারের প্রয়োজনে সুপ্রভাদেবীকে এক সময়ে বিদ্যাসাগর বানীভবন বিদ্যাশ্রমে সেলাইয়ের কাজও করতে হয়েছিল।
দশ বছর বয়সে বালিগঞ্জ হাইস্কুলে ফিথ ক্লাসে অর্থাৎ এখনকার মতে ক্লাস সিক্সে ভর্তি হন। এখান থেকে তিনি ম্যাট্রিক পাশ করার পর প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে অর্থনীতিতে অনার্স নিয়ে বি. এ পাশ করেন ১৯৩৮ খ্রিঃ ।
বাবা এবং ঠাকুরদার কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রেই শিল্প- সাহিত্যের প্রতিভা লাভ করেছিলেন সত্যজিৎ। স্কুলে থাকতে বাড়ির সংগ্রহের রেকর্ড শুনে পাশ্চাত্য সঙ্গীতে দীক্ষিত হয়ে যান। ব্রাহ্ম পরিবারের সন্তান হিসেবে এর পাশাপাশি ব্রহ্মাসঙ্গীত, রবীন্দ্রসঙ্গীত ও ভারতীয় মার্গসঙ্গীতের প্রতিও অনুরাগ জন্মেছিল।
চিত্রশিল্পের চর্চা বাল্যবয়স থেকেই ছিল। বি. এ পাশ করার পর শিল্প শিক্ষার জন্য ভর্তি হন রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতনে। কিন্তু আধুনিকমনা সত্যজিতের পক্ষে এখানকার পরিবেশ মনঃপুত না হওয়ায় শিক্ষা অসমাপ্ত রেখেই কলকাতায় চলে আসেন।
১৯৪০ খ্রিঃ এপ্রিল মাসে তিনি ব্রিটিশ বিজ্ঞাপন কোম্পানি ডিজে কিমার সংস্থায় জুনিয়র ভিসুয়ালাইজার হিসেবে যোগ দেন। এই সময়েই তিনি সিগনেট প্রেস প্রকাশন সংস্থার বইয়ের প্রচ্ছদ আঁকা শুরু করেন। ছোটদের পত্রিকা মৌচাকেও তাঁর প্রথম আঁকা অলঙ্করন প্রকাশিত হয় ।
অক্ষরলিপিতেও এই সময় তিনি দক্ষতা অর্জন করেন। পরবর্তীকালে অক্ষরলিপিতে রোমান টাইপ সিরিজ তাঁর বিশেষ অবদান বলে স্বীকৃত হয়। কয়েক বছরের মধ্যেই বিজ্ঞাপন প্রতিষ্ঠানের আর্ট ডিরেক্টারের পদে উন্নীত হন। তাঁর প্রথম চলচ্চিত্র পথের পাঁচালীর সাফল্যের পর ১৯৫৬ খ্রিঃ এই চাকরিতে ইস্তফা দেন।
সত্যজিৎ রায় পরিচালিত পথের পাঁচালীর প্রথম প্রদর্শনী হয় নিউইয়র্কে ১৯৫৫ খ্রিঃ এপ্রিলে। কলকাতায় মুক্তি পায় সেই বছরেই ২৬ শে আগস্ট। ছবিটি সেই বছরই রাষ্ট্রপতির স্বর্ণ ও রৌপ্য পদক পায়।
১৯৫৬ খ্রিঃ কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে বেস্ট হিউম্যান ডকুমেন্ট- এর প্রশংসাপত্র লাভ করে। এরপর ১৯৬৬ খ্রিঃ পর্যন্ত পথের পাঁচালী বিশ্বের বিভিন্ন চলচ্চিত্রোৎসবে পুরস্কৃত ও সম্মানিত হয়েছে। এরপর থেকে চলচ্চিত্রকার সত্যজিতের জয়যাত্রা শুরু হয়। তাঁর
পরিচালিত প্রায় সবকটি ছবিতেই তাঁর সৃজনশীল প্রতিভার বিস্ময়কর প্রকাশ ঘটেছে যা ভারতীয় অন্য কোন ছবিতে ছিল দুর্লভ। বস্তুতঃ সত্যজিৎ ভারতীয় চলচ্চিত্রের গোত্রান্তর ঘটিয়েছিলেন। তাঁর পরিচালিত উল্লেখযোগ্য ছবি অপরাজিত, অপুর সংসার,বাবা এবং ঠাকুরদার কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রেই শিল্প- সাহিত্যের প্রতিভা লাভ করেছিলেন সত্যজিৎ। স্কুলে থাকতে বাড়ির সংগ্রহের রেকর্ড শুনে পাশ্চাত্য সঙ্গীতে দীক্ষিত হয়ে যান। ব্রাহ্ম পরিবারের সন্তান হিসেবে এর পাশাপাশি ব্রহ্মাসঙ্গীত, রবীন্দ্রসঙ্গীত ও ভারতীয় মার্গসঙ্গীতের প্রতিও অনুরাগ জন্মেছিল।
চিত্রশিল্পের চর্চা বাল্যবয়স থেকেই ছিল। বি. এ পাশ করার পর শিল্প শিক্ষার জন্য ভর্তি হন রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতনে। কিন্তু আধুনিকমনা সত্যজিতের পক্ষে এখানকার পরিবেশ মনঃপুত না হওয়ায় শিক্ষা অসমাপ্ত রেখেই কলকাতায় চলে আসেন।
১৯৪০ খ্রিঃ এপ্রিল মাসে তিনি ব্রিটিশ বিজ্ঞাপন কোম্পানি ডিজে কিমার সংস্থায় জুনিয়র ভিসুয়ালাইজার হিসেবে যোগ দেন। এই সময়েই তিনি সিগনেট প্রেস প্রকাশন সংস্থার বইয়ের প্রচ্ছদ আঁকা শুরু করেন। ছোটদের পত্রিকা মৌচাকেও তাঁর প্রথম আঁকা অলঙ্করন প্রকাশিত হয় ।
অক্ষরলিপিতেও এই সময় তিনি দক্ষতা অর্জন করেন। পরবর্তীকালে অক্ষরলিপিতে রোমান টাইপ সিরিজ তাঁর বিশেষ অবদান বলে স্বীকৃত হয়। কয়েক বছরের মধ্যেই বিজ্ঞাপন প্রতিষ্ঠানের আর্ট ডিরেক্টারের পদে উন্নীত হন। তাঁর প্রথম চলচ্চিত্র পথের পাঁচালীর সাফল্যের পর ১৯৫৬ খ্রিঃ এই চাকরিতে ইস্তফা দেন।
সত্যজিৎ রায় পরিচালিত পথের পাঁচালীর প্রথম প্রদর্শনী হয় নিউইয়র্কে ১৯৫৫ খ্রিঃ এপ্রিলে। কলকাতায় মুক্তি পায় সেই বছরেই ২৬ শে আগস্ট। ছবিটি সেই বছরই রাষ্ট্রপতির স্বর্ণ ও রৌপ্য পদক পায়।
১৯৫৬ খ্রিঃ কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে বেস্ট হিউম্যান ডকুমেন্ট- এর প্রশংসাপত্র লাভ করে। এরপর ১৯৬৬ খ্রিঃ পর্যন্ত পথের পাঁচালী বিশ্বের বিভিন্ন চলচ্চিত্রোৎসবে পুরস্কৃত ও সম্মানিত হয়েছে। এরপর থেকে চলচ্চিত্রকার সত্যজিতের জয়যাত্রা শুরু হয়। তাঁর
পরিচালিত প্রায় সবকটি ছবিতেই তাঁর সৃজনশীল প্রতিভার বিস্ময়কর প্রকাশ ঘটেছে যা ভারতীয় অন্য কোন ছবিতে ছিল দুর্লভ। বস্তুতঃ সত্যজিৎ ভারতীয় চলচ্চিত্রের গোত্রান্তর ঘটিয়েছিলেন। তাঁর পরিচালিত উল্লেখযোগ্য ছবি অপরাজিত, অপুর সংসার,